December 25, 2024, 6:20 am

মণিরামপুরের রোকেয়া ক্লিনিকে সম্পন্ন হলো আইয়ুবের জটিল অপারেশন ‘হিপ রিসপ্লেসমেন্ট’

নূরুল হক, মণিরামপুর প্রতিনিধি:
  • Update Time : Monday, December 21, 2020,
  • 408 Time View

গত এক বছর ধরে যশোর, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষুধ সেবন করে আসলেও কোন উপসম হচ্ছিল না ইটভাটা শ্রমিক আইয়ুব আলীর।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসকের কাছে গেলে ‘হিপ রিসপ্লেসমেন্ট’ অপারেশনে ৪ লাখ টাকার কথা বললেও তার অর্ধেকেরও কম টাকায় মণিরামপুরের রোকেয়া ক্লিনিকে এ ধরনের জটিল অপারেশনে ভাল হয়েছেন তিনি।

এ ধরনের অপারেশন এ অঞ্চলে বিরল বলে সংশ্লিষ্ট অনেকেই মন্তব্য করেন। যশোরের মণিরামপুরের স্বরূপদহ গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আইয়ুব আলী বছরখানেক আগে ভাটা শ্রমিক গিয়ে দুর্ঘটনায় তার মাজার হাড় ভেঙ্গে যায় ।

ঢাকাতে গিয়ে ধরা পড়ে তার মাজার হাড় ভেঙ্গে গেছে। এমনিতে তার একার রোজগারে চলে সংসার। কাজ করতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা-দু’মুঠো অন্ন জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল।

এত টাকার কথা শুনে যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। কিছুদিন আগে আইয়ুব সরনাপন্ন হন মণিরামপুর পৌর শহরস্থ রোকেয়া ক্লিনিকে। এ ক্লিনিকে ডাঃ নজরুল ইসলামের তত্বাবধায়নে আইয়ুবের ‘হিপ রিসপ্লেসমেন্ট’ অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়। আইয়ুবের এ অপারেশনের জন্য ঢকা থেকে ভাড়া করে আনা হয় ডাঃ নজরুল ইসলামের সহযোগী হিসেবে ছিলেন তারই ছেলে ডাঃ মোসাব্বিরুল ইসলাম রিফাত।

ডাঃ নজরুল ইসলাম যশোর আদ্ব দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান ও যশোর পঙ্গু সেবা কেন্দ্রের স্বত্ত¡াধিকারী। ছেলে ডাঃ রিফাত ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে (নিটোর) এমএস অর্থোপেডিক্সে অধ্যায়নরত ও মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। ডাঃ রিফাত জানান, এটি একটি জটিল অপারেশন।

হিপ রিসপ্লেসেমেন্ট বা টোটাল হিপ প্রতিস্থাপন এমন এক ধরনের সার্জারি যার মাধ্যমে উরুসন্ধির অসুস্থ তরুনাস্থি ও হাড় কেটে বাদ দিয়ে ওই জায়গায় কৃত্রিম জয়েন্ট (প্রোস্থেসিস) বসানো হয়। ডাঃ নজরুল ইসলাম এলাকায় গরীবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলের মধ্যে তিনি কম টাকায় অপারেশন করে থাকেন।

পৌর শহরের থানা মোড়ে তার মালিকানাধীন রোকেয়া ক্লিনিকে দীর্ঘ চার দশক ধরে গরীব ও অসহায় রোগীদের এ ধরনের সেবা দিয়ে চলেছেন। দুই দশ আগে তিনিই প্রথম যশোর আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ইন্টারলকিং নেইলের মাধ্যমে হাড়ের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেন।

এদিকে তার সুযোগ্য পুত্র ডাঃ রিফাত করোনকালীন সময় মণিরামপুর উপজেলার করোনা রোগীদের সেবা করে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি ঝুঁকি নিয়ে সেবার ব্রত নিয়ে করোনা রোগী ও তার পরিবারের পাশে থেকে সেবা ও পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। আইয়ুব আলী বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাটাচলা করতে পারছিলেন না। অর্থাভাবে অপারেশনও করাতে পারছিলেন না।

অন্য জায়গার তুলনায় প্রায় ২ লাখ কমে মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় অপারেশন করিয়ে এখন তিনি হাটাচলা করতে পারছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71